ইসলামে পুরুষের মাথা ঢাকার নিমিত্তে টুপি বা পাগড়ি পড়ার প্রচলন আছে। রাসূল সা মাথা ঢেকে রাখতে পছন্দ করতেন, তাই টুপি পড়া বা মাথায় একখন্ড কাপড় রাখা সুন্নাহও।
তাই বলে টুপির ভিন্নতা মুসলিমের মাঝে ভিন্নতা বিধান করে না। এটা নিয়ে এমন তর্ক বিতর্ক সৃষ্টি করা খুবই কষ্টকর ও আমি বলবো একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে, আল্লাহর বান্দা হিসেবে, মুহাম্মদ সা এর উম্মত হিসেবে খুউবই অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ। ইসলামের মতন এত সৌন্দর্যমণ্ডিত দ্বীন পালন করে তার অনুসারিরা টুপির আকার আকৃতি নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয় তা সত্যিই আশাহত করে, কোন অবস্থাতেই তা কাম্য নয়।
টুপি বা মাথা ঢেকে রাখার অনেকগুলো সামাজিক ও পরিবেশগত কল্যাণ রয়েছে। যদিও এগুলো মূল না বরং আমরা সুন্নাহ মেনেই টুপি পড়বো, কিন্তু সুন্নাহতে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণ।
সমাজে প্রত্যেকটা মানুষই একজন অন্যজনের চেয়ে ভিন্ন। তাদের মাথার আকার আকৃতি ভিন্ন। চুলের গ্রোথ ভিন্ন, ভলিউম ভিন্ন। তাই এক আকৃতির টুপি সবার মাথায় সমান ভাবে বসবে তা অসম্ভব। জন্মগতভাবেই মানুষের অনুভুতিতে পার্থক্য থাকে। তাই তাদের পছন্দ ভালো লাগা, কম্ফোর্ট ভিন্ন হয়। আমার ছেলের মাথায়ই অনেকধরনের টুপি বসে না। এটা রাসূল সা জানতেন, কারণ তিনি সুক্ষ্মদর্শী ছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ। তাই বিভিন্নসময় বিভিন্ন ভাবে মাথা ঢেকে রাখার সুন্নাহ দিয়ে গিয়েছেন। অধিকাংশ পুরুষের মাথার চাঁদির অংশে চুল কম থাকে বা পড়ে যায়। তাদের জন্য ফোলানো টুপিগুলো অধিক উপযোগি। বাইরে থেকে বোঝা যাবে না সে টাকওয়ালা না কি কেশবান। এটা তার ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব ফেলে। এ ধরনের সৌন্দর্যের ব্যাপারে ইসলাম উৎসাহিত করে। আবার অনেকের মাথার উপর কাকের বাসা টাইপের কেশ থাকে। তাদের জন্য একটু চেপে বসা টুপি অধিক সৌন্দর্য বর্ধণকারী। যে কারনে যুগে যুগে বিজ্ঞ আলেমগন 'পরিপাটি সৌন্দর্যের' জন্য একেকজন একেক রকম টুপি বা পোষাকের প্রচলন করে গিয়েছেন যাতে ইসলামিক পোষাকের পর্দার বিষয়গুলো মেনে চলার পাশাপাশি উম্মতের সব ধরনের মানুষের 'সর্বোচ্চ পরিপাটিময় সৌন্দর্য' প্রস্ফুটিত হয়।
এটাই ইসলাম ও তার অনুসারিদের সৌন্দর্য। যে ইসলামকে ধারন করবে তার বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ বেশভুষা হবে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, ব্যক্তিত্বপূর্ণ, মনোহর। তাকে দেখলে চক্ষু প্রশান্ত হবে, কথা বললে অন্তর প্রশান্ত হবে। যদি আপনি এমনটা হন বুঝবেন আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে পেরেছেন, যদি না হন বুঝবেন এখনও পথচলা বাকি আছে। তাই শুধু কুরআন সুন্নাহ মুখস্ত করা মানেই ইসলামে দাখিল হওয়া নয়, তা নিজের ব্যক্তিত্বে ধারণ করতে পারাটাই ইসলাম। 💚
বিঃদ্রঃ কেউ ব্যক্তিগত বা দলীয়ভাবে আঘাত পাবেন না। নিতান্তই বিষয়টা আমার অপছন্দ হয়েছে বলে নিজের কিছু কথা জানালাম। এটা শরীয়াহ ভিত্তিক বা কোন বিধানের আলোকে লেখা নয়। তাই ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
জ/১